“হালখাতা” সফটওয়্যারটি ব্যবহার করে লাভবান হবেন বিভিন্ন শ্রেণীর ব্যবসায়ীগণ। হালখাতা ব্যবহারে ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসার সকল হিসাব- নিকাশ খুব সহজেই রাখতে পারবেন। এতে ব্যবসায়ীদের হিসাব সংক্রান্ত ব্যাপারে কোন সময় ভুল হবে না সেই সাথে পণ্যের মজুত ও চলতি পণ্যের সঠিক বিবরন সহজেই পাওয়া যাবে। এ ছাড়া ও ব্যবহারকারিদের সুবিধার্থে হালখাতার ইন্টারফেস করা হয়েছে খুবই চমৎকার। এ রকম বেশকিছু প্রয়োজনীয় সুবিধা সহ সফটওয়্যারটি আমরা সাধারণ মানুষের কাছে স্বল্প মূল্যে পৌছে দিতে পারব বলে আশা করছি। এই “হালখাতা” সফটওয়্যারটি ব্যবহারের ফলে ব্যবসা ও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নায়ন করা সম্ভব হবে। সফটওয়্যারটির সুবিধাগুলোর মধ্যে আছে কোনো প্রতিষ্ঠানের হিসাব ও খতিয়ান তৈরি, দেনা-পাওনার হিসাব রাখা, মেমো প্রিন্ট করা, গুদামে নির্দিষ্ট পণ্যের পরিমাণ দেখা ইত্যাদি।
হালখাতা সফটওয়্যার মূলত ৬টি অংশ রয়েছে। যথাক্রমে ক্রয়, বিক্রয়, মজুদ, খরচ, জমা এবং হিসাব। এই ৬টি অংশ নিয়ন্ত্রণ এর জন্য আরো একটি অংশ রয়েছে ব্যবস্থাপনা।
ব্যবস্থাপনাঃ
লেজারঃ
১) হালখাতা সফটওয়্যরটিতে ৩ ধরণের লেজার খোলার সুবিধা পাওয়া যাবে। নতুন কোনো বায়ার (বিক্রেতা) এর কাছ থেকে পণ্য কেনার ক্ষেত্রে, নতুন কাস্টমারের (ক্রেতা) কাছে পণ্য বিক্রয়ের ক্ষেত্রে ও ব্যবসার অন্যান্য খরচ এর সমস্ত হিসাব এই ৩ টি লেজারে থাকবে।
অ্যাড/ আপডেট লেজারঃ
১) যে কোনও নতুন বায়ার/কাস্টমার (ক্রেতা/বিক্রেতা)এর জন্য তাদের সম্পূর্ণ তথ্য দিয়ে নতুন লেজার তৈরী করতে হবে। নতুন বায়ার/কাস্টমার কে গ্রুপ করেও রাখা যাবে। প্রতিটা কাস্টমারের সাথে কোনো পুরোন দেনা-পাওনা থাকলে সেটাও দেখা যাবে।
পুরানো বায়ার/কাস্টমার এর তথ্য সংশোধন এর জন্য আইডি এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে অ্যাকাউন্ট তৈরী করে তথ্য সংশোধন করতে হবে। এক্ষেত্রে পুরানো এবং নতুন সব তথ্যই লেজার এ থাকবে।
গুদামঃ
১) গুদামের একটি নাম দিয়ে প্রথমে নতুন গুদাম তৈরী করতে হবে।
২) গুদাম নাম পরিবর্তন হলে গুদামের বর্তমান নাম পরিবর্তন করে গুদামের নতুন নাম লিখে আপডেট করতে হবে।
৩) গুদাম পরিবর্তন হলে বর্তমান গুদামের নাম পরিবর্তন করে নতুন গুদামের নাম লিখে, বর্তমান এককসংখ্যা পরিবর্তন করে নতুন এককসংখ্যা দিয়ে আপডেট করতে হবে।
পণ্যঃ
১) নতুন পণ্যের ক্ষেত্রে পণ্যের নাম, এককের নাম, এককের সাইজ, ক্যটাগরি ইত্যাদি তথ্য দিয়ে পণ্যের লিস্ট তৈরী করতে হবে।
২) বিদ্যমান পণ্যের একক সংখ্যা, খুচরা সংখ্যা, প্রতি এককের দাম এবং কোন গুদাম এ আছে তা আপডেট করে রাখতে হবে।
মেমো সেটিংঃ
এই শাখায় একবার ক্রয় এবং বিক্রয়ের মেমো নাম্বার বসিয়ে একটি মেমো তৈরী করতে হবে। পরবর্তীতে কোনও ক্রয় বিক্রয়ের সময় মেমো নাম্বার সয়ংক্রিয়ভাবে বেড়ে তৈরী হয়ে যাবে।
ব্যবহারকারীঃ
ব্যবহারকারী বা একাউন্ট তৈরী করতে ৬ষ্ঠ শাখা “ব্যবহারকারী” তে যেতে হবে। নতুন আইডি, নাম এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে একাউন্ট তৈরী করতে হবে।
কোম্পানিঃ
১) এই শাখায় হালখাতা সফটওয়্যার ব্যবহারকারী প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানিকে তাদের কোম্পানির পূর্ণ নাম, ঠিকানা এবং আরও বিস্তারিত তথ্য দিয়ে আপডেট করতে হবে। পরবর্তীতে সক্ল রিপোর্ট এবং মেমো প্রিন্ট করার সময় কোম্পানির এই নাম এবং তথ্য ব্যবহৃত হবে।
ব্যাক আপঃ
ব্যাক আপ শাখায় ৩টি অংশ রয়েছে।
১) ইমপোর্টঃ বাইরে থেকে সিডি বা পেনড্রাইভের মাধ্যমে পুরাতন ডাটা মেমরীতে নিয়ে আসা যাবে এবং সকল রিপোর্ট দেখা যাবে।
২) এক্সপোর্টঃ সিডি বা পেনড্রাইভের মাধ্যমে হালখাতা সফটওয়্যারের ডাটা অন্য কোনও ডিভাইসে সংরক্ষণ করা যাবে, এটি মূলত ডাটা ব্যাকআপ এর কাজটি করে।
৩) প্রয়োজনে সমস্ত ডাটা রিসেট দেওয়া যাবে।
- প্রতি ১৫ মিনিট পরপর স্বয়ংক্রিয় ভাবে ডাটা ব্যাকআপ হতে থাকবে।
ক্রয়ঃ
এই মডিউলে বায়ার এর কাছ থেকে কেনা সমস্ত পণ্যর হিসাব ৩টি শাখায় থাকবে। যথাক্রমেঃ ক্রয় মেমো, রিপোর্ট, মেমোসমূহ এবং মূল মেনুতে ফিরে যাওয়ার জন্য পিছনে অপশন রয়েছে।
ক্রয় মেমোঃ ক্রয় মেমোতে ব্যবহারকারীর সুবিধার্থে গাড়ি ভাড়া, লেবার খরচ ও অন্যান্য খরচ বসাতে হবে। তাহলে প্রতি পণ্যের পিছনে ব্যায়কৃত খরচ এবং ক্রয়মূল্যের মোট দাম চলে আসবে।
রিপোর্টঃ প্রতিষ্ঠানের এ যাবৎ যত পণ্য কেনা হয়েছে সব কিছুর তথ্য থাকবে। কোন পার্টির কাছ থেকে কবে,কত টাকার,কোন মাল ক্রয় করা হয়েছে সকল তথ্য থাকবে। তাছাড়া কোন পার্টি আমার কাছে কত টাকা পাওনা সে সকল তথ্যও থাকবে। এখানে গ্রাফচিত্রের সাহাজ্যে সকল তথ্য অনেক সহজেই দেখা যাবে।
মেমো সমূহঃ প্রতিষ্ঠানের এ যাবৎ কালের কেনা সব পণ্যের মেমো রশীদ এখান থেকে দেখা যাবে।
বিক্রয়ঃ
এই মডিউলে বায়ার এর কাছ থেকে কেনা সমস্ত পণ্যর হিসাব ৩টি শাখায় থাকবে। যথাক্রমেঃ বিক্রয় মেমো, রিপোর্ট, মেমোসমূহ এবং মূল মেনুতে ফিরে যাওয়ার জন্য পিছনে অপশন রয়েছে।
বিক্রয় মেমোঃ প্রতিটি পণ্য বিক্রয়ের মেমো অনেক সহজে তৈরি করা যাবে। প্রিন্টও হবে এক ক্লিক এই।
রিপোর্টঃ প্রতিষ্ঠানের এ যাবৎ যত পণ্য কেনা হয়েছে সব কিছুর তথ্য থাকবে। কোন কাস্টমার এর কাছে কত টাকা পাওনা তা দেখা যাবে এক ক্লিক এই। তাছাড়া কোন পণ্যে কত টাকা লাভ হয়েছে, কোন কাস্টমার এর কাছে কত টাকা লাভ হয়েছে,কোন পণ্য সব থেকে বেশি বিক্রি হয়েছে, ইত্যাদি তথ্য গ্রাফ চিত্র সহকারে দেখা যাবে এক ক্লিক এই।
মেমো সমূহঃ প্রতিষ্ঠানের কেনা সব পণ্যের মেমো রশীদ দেখা যাবে এখান থেকেই।
মজুদঃ
এখানে থেকে ষ্টক এর সকল তথ্য দেখা যাবে।
১) প্রাথমিক ভিউঃ সব পণ্যের মজুদ সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা দেওয়া থাকবে।
২) বিস্তারিতঃ সব পণ্যের মজুদ সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দেওয়া থাকবে
৩) গ্রুপঃ পণ্যের গ্রুপের ভিত্তিতে পণ্যের তথ্য দেখাবে।
৪) গোডাউনঃ কোন গুদামে কী পরিমাণ পণ্য আছে তার বিস্তারিত দেখাবে।
৫) শেষঃ যদি কোন পণ্য শেষ হয়ে আসে তাহলে আগে থেকে একটা সংকেত দেওয়া হবে।
৬) প্রায় শেষঃ কোন পণ্যর মজুদ একটা নির্দিষ্ট পরিমাণে কমে আসলে তাহলে সংকেত দেওয়া হবে।
গুদাম মডিউলটিতে আরও রয়েছে বর্তমান স্টক, প্রতিদিনের স্টক, প্রিন্ট ও সার্চ অপশন। এগুলো থেকে গুদামের সম্পর্কে একটা প্রাথমিক ধারণা পাওয়া যাবে।
খরচঃ
এই সেকশনে লেজার থেকে তথ্য নিয়ে কোন ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠান এর দেনা অথবা অন্য কোন খাতে টাকা পরিশোধ /খরচ করা যাবে।
জমাঃ
এই সেকশনে লেজার থেকে তথ্য নিয়ে কোন ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠান এর পাওনা অথবা অন্য কোন খাতে টাকা আদায় /জমা করা যাবে।
হিসাবঃ
১) লাভঃ এই শাখায় প্রতিদিনের লাভ, ক্যাটাগরির ভিত্তিতে লাভ দেখা যাবে গ্রাফ চিত্রে। প্রয়োজনে প্রিন্ট করা যাবে।
প্রতিদিনের লাভঃ প্রতিদিনের লেনদেনের ভিত্তিতে লাভ-ক্ষতির ধারণা পাওয়া যাবে। দৈনিক, সাপ্তাহিক, মাসিক, বার্ষিক হিসাবের জন্য ক্যালেন্ডার এর ভিত্তিতে অনুসন্ধান এর ব্যবস্থা রয়েছে।
৩) অ্যাডজাস্ট ক্যাশঃ এই পর্যন্ত যত লেনদেন হয়েছে তার ভিত্তিতে যে ইনস্ট্যান্ট ক্যাশ থাকবে তা বসিয়ে প্রতিদিনের হিসাব শুরু করতে হবে।
৪) গ্রুপ সামারিঃ এখান থেকে লেজারসমূহকে গ্রুপ করা যাবে এবং গ্রুপ এর ভিত্তিতে লেজারের লেনদেনসমূহ দেখা যাবে।
৫) স্টাফ বেতনঃ এই শাখায় করমচারীদের বেতন ও অন্যান্য খরচ, পুরানো বাকী বেতন, কোম্পানির কাছে কর্মচারীর কাছে দেনা থাকলে তা দেখা যাবে এবং পরশোধ করা যাবে।
৬) স্টাফ সামারিঃ এইশাখায় স্টাফদের দেনা-পাওনাসহ অন্যান্য কোন তথ্য থাকলে তা দেখা যাবে।